রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৩৬ অপরাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক: টাঙ্গাইলের মধুপুরে যাত্রীবাহী বাসে ডাকাতি ও নারী যাত্রীকে ধর্ষণের মামলায় আরো দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। আজ শুক্রবার (৫ আগস্ট) সকালে গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার দুপুরে তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- গাজীপুর জেলার কালিয়াকৈর উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে আউয়াল (৩০) ও কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার ধোনারচর পশ্চিমপাড়া গ্রামের বাহেজ উদ্দিনের ছেলে নুরনুবী (২৬)।
এর আগে এ ঘটনার মূলহোতা ঝটিকা পরিবহনের চালক রাজা মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়। এ নিয়ে এই মামলায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হলো।
পুলিশ সুপার জানান, আসামি রাজা মিয়ার তথ্য অনুযায়ী অভিযান চালিয়ে আউয়ালকে গাজীপুর জেলার সূত্রাপুর টান কালিয়াকৈর এলাকা থেকে ও অপর আসামি নুরনবী কালিয়াকৈরের সোহাগপল্লীর শিলাবহ পশ্চিমপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে নুরনবীর কাছ থেকে যাত্রীদের একটি মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। এরপর তাদেরকে আদালতে পাঠানো হবে।
এই মামলায় এ পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আগেও নুরনবীর বিরুদ্ধে ডাকাতি ও ছিনতাই মামলা রয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে আর কোনো অপরাধ আছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) গ্রেপ্তার হওয়া আসামি রাজা মিয়া পাঁচদিনের রিমান্ডে রয়েছে।
পুলিশ বলছে, ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রায় সবাইকে চিহ্নিত করা গেছে। তাদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।
এদিকে এ ঘটনায় বিভিন্ন মহলে এ ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় চলছে ব্যাপক সমালোচনা ও নিন্দা। টাঙ্গাইলে বাসকেন্দ্রীক হত্যা, ধর্ষণ ও ডাকাতির ঘটনাগুলোর উপযুক্ত বিচার দাবি করছেন সবাই।
উল্লেখ্য, ঈগল এক্সপ্রেসের একটি বাস গত বুধবার (৩ আগস্ট) রাত ৮টার দিকে কুষ্টিয়া থেকে ছাড়ে। গস্তব্য ছিল নারায়ণগঞ্জ। রাত সাড়ে ১১টার দিকে পৌঁছে সিরাজগঞ্জের জনতা হোটেলে। মহাসড়কের পাশের এই হোটেলে যাত্রীরা খাওয়া-দাওয়া করেন। যাত্রাবিরতি শেষে রাত ১২টার দিকে গন্তব্যের দিকে রওনা দেয় বাসটি। সিরাজগঞ্জ জেলার মধ্যেই তিন ধাপে ১৩ জন বাসটিতে ওঠে। তখনও বাসে থাকা যাত্রীরা আঁচ পারেননি আগামী কয়েক ঘণ্টায় কী ঘটতে যাচ্ছে।
এরপরই শুরু হয় তিন ধাপে বাসে ওঠা ১৩ ডাকাতদের তাণ্ডব। প্রথমে চালকের গলায় ছুরি ঠেকিয়ে চালক, হেলপার ও সুপারভাইজারকে বেঁধে ফেলে ডাকাতদল। এরপর যাত্রীদের বেঁধে বাসটি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে লুট করে মালামাল। লুটপাট শেষে এক নারী যাত্রীকে ধর্ষণ করে। প্রায় আড়াই ঘণ্টা লুটপাট, অত্যাচার ও ধর্ষণ চালিয়ে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়ায় একটি বালুর স্তূপে বাসটি উল্টে দিয়ে পালিয়ে যায় ডাকাতদল।
এঘটনায় মধুপুর থানায় ওই বাসের এক যাত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাত ১০-১২জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। এছাড়া ধর্ষিতা নারী বাদী হয়ে আরেকটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই নারী গতকাল আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে পরীক্ষায় ধর্ষণের আলামত মিলেছে। আদালতে ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন ওই নারী।